পাকিস্তানে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেশটিতে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় ও দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭০৬ জনে দাঁড়িয়েছে। সেখানকার সেনাবাহিনী সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করেছে। ২০ আগস্ট বুধবার দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে পিটিআই।

ওই গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সর্বশেষ আপডেটে পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত আরও ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে ২৬ জুন থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ৭০৬ জনে এসে ঠেকেছে। এছাড়া বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যা বেড়ে ৯৬৫ জন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খাইবার-পাখতুনখাওয়া (কেপি) প্রদেশ, যেখানে এখন পর্যন্ত ৪২৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এরপরই রয়েছে পাঞ্জাব (১৬৪ জন), সিন্ধ (২৯ জন), বেলুচিস্তান (২২ জন), পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (৫৬ জন) এবং ইসলামাবাদ অঞ্চল (৮ জন)।

সম্প্রতি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে সোয়াবি, নওশেরা, মারদান ও পেশোয়ার জেলায়, যেখানে টানা ভারী বর্ষণ ও আকস্মিক বন্যায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হচ্ছে বুনের জেলা, যেখানে এখন পর্যন্ত ২২২ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে এবং বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

গত শুক্রবার রাতে বুনের জেলার বেসোনাই গ্রাম আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে যায় এবং উদ্ধারকর্মীরা এখনো জীবিতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্য যেসব জেলা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বাজউর, সোয়াত, বাত্তাগ্রাম, মানসেহরা, শাংলা, দির আপার, দির লোয়ার ও তোরঘর।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত টানা প্রবল বর্ষণের পর সৃষ্ট বন্যার সাথে যুক্ত হয় মেঘফাটল, যা ধ্বংসযজ্ঞ আরও তীব্র করে তোলে। সোমবার আবারও ওই অঞ্চলে নতুন করে ভারি বৃষ্টি হয়। কেপি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় ৭৮০টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৩৪৯টি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই ২৫ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং এক হাজারেরও বেশি মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কর্মকর্তারা সতর্ক করে জানিয়েছেন, আগামী ২১ আগস্ট পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, তাই স্থানীয়দের প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে।